ফারসি সাহিত্যের ব্যাপ্তি ও গভীরতা বিশাল। বিশ্ব সাহিত্যের যে কোনো উঁচু মানের সৃষ্টির সাথে এটি পাল্লা দেয়ার ক্ষমতা রাখে। এর ঐতিহ্য প্রাচীন। খ্রিস্টপূর্ব ৬৫০ অব্দ থেকে সূচিত হয়েছে এর জয়যাত্রা। তখন থেকে এ ভাষায় লেখা হয়েছে গাথা নামের ঐশ্বরিক গানের সম্ভার, আবেস্তা নামের প্রাচীন ধর্মীয় রচনা এবং ইরানী রাজ দরবারের...
আরো পড়ুন
ফারসি সাহিত্যের ব্যাপ্তি ও গভীরতা বিশাল। বিশ্ব সাহিত্যের যে কোনো উঁচু মানের সৃষ্টির সাথে এটি পাল্লা দেয়ার ক্ষমতা রাখে। এর ঐতিহ্য প্রাচীন। খ্রিস্টপূর্ব ৬৫০ অব্দ থেকে সূচিত হয়েছে এর জয়যাত্রা। তখন থেকে এ ভাষায় লেখা হয়েছে গাথা নামের ঐশ্বরিক গানের সম্ভার, আবেস্তা নামের প্রাচীন ধর্মীয় রচনা এবং ইরানী রাজ দরবারের মহিমা বয়ানকারী অনেক অনেক মহাকাব্য। সপ্তম শতকে ইসলামের সংস্পর্শে এসে পারস্য সমাজ ও সাহিত্য নবতর মহিমায় ফুলে ফলে উজ্জ্বল প্রোজ্জ্বল হয়ে ওঠে। আরবি লিপি গ্রহণের মাধ্যমে ফারসি সাহিত্য ইসলামের এক নূতন বিশ্বজনীন ভাষা রূপে আবির্ভূত হয়। কালক্রমে মহাকাব্য কসিদা গজল আখ্যানমূলক মাসনভী ইত্যাদির এক বিপুল ভাব সম্ভার সৃষ্টি হয় ফারসি সাহিত্যে। এ ভাষা ইরান ছাড়িয়ে হয়ে ওঠে এ ল্যাংগুয়েজ অ্যান্ড লিটারেচর অব উইদওয়াট বর্ডার। এর ভাষার সৌন্দর্য সুর, ছন্দ, লালিত্য, ঝংকার মধুরতা ছড়াতে থাকে শ্রোতা ও পাঠকের কানে। এর কাব্যে অনায়াসে ঢুকে পড়েছে গল্পের শরীর, কিংবা গল্পগুলো হয়ে ওঠেছে কাব্যের সুরের সারথি। আধুনিকতার ছোঁয়ায় পারস্য তথা ইরানি গল্পগুলোতে প্রতিফলিত হয়েছে ব্যক্তি স্বাতন্ত্রবোধ, হারানো শৈশব ও স্মৃতি কাতরতা, নরনারীর প্রণয় ভালোবাসা, দাম্পত্য জীবন, ভালোবাসার ভান ও প্রতারণার লড়াই, সমাজ বাস্তবতায় মানুষের কপটাতা ও ভণ্ডামির কৌতুককর ও বিদ্রূপাত্মাক পরিবেশনা, যুদ্ধাক্রান্ত দেশগুলোর মানবিক অস্তিত্বের সংকট, বুদ্ধি দীপ্ত হাস্যরস পরিপূর্ণ চরিত্রের বিকাশ ইত্যাদি। ড. মুমিত আল রশিদ-এর এই বইতে ইরানি প্রেমের গল্পের ভাব বিষয় ও বৈশিষ্ট্যাবলী বর্ণিত হয়েছে সহজ ও সরল ভাষায়। আশা করি এ বইটি পাঠক সমাজকে ইরানি তথা ফারসি সাহিত্য অধ্যয়নে আরো বেশি আগ্রহ করে তুলবে।
কম দেখান