মুসলমান ধর্মীয় সমাজের স্বাভাবিক দৃশ্য হল কোনও প্রতিভাবান অগ্রসর সন্তান ধর্মের সৌন্দর্য ও উন্নত দিক নিয়ে এ সমাজের সমৃদ্ধির কারণে নতুন কোনও সুকৃতি সমিধ প্রদর্শন করতে পারেন তিনি অবশ্যই ধর্মীয় রক্ষণশীলতা দ্বারা বাধাগ্রস্ত হন। তিরস্কৃত হয়ে ধর্মদ্রোহী আখায়িত হন, তাঁর সুকৃতিকে বেদাত বলে ধর্মের জন্য পরিত্যাজ্য করে। কিন্তু সে উদ্ভিন্ন...
আরো পড়ুন
মুসলমান ধর্মীয় সমাজের স্বাভাবিক দৃশ্য হল কোনও প্রতিভাবান অগ্রসর সন্তান ধর্মের সৌন্দর্য ও উন্নত দিক নিয়ে এ সমাজের সমৃদ্ধির কারণে নতুন কোনও সুকৃতি সমিধ প্রদর্শন করতে পারেন তিনি অবশ্যই ধর্মীয় রক্ষণশীলতা দ্বারা বাধাগ্রস্ত হন। তিরস্কৃত হয়ে ধর্মদ্রোহী আখায়িত হন, তাঁর সুকৃতিকে বেদাত বলে ধর্মের জন্য পরিত্যাজ্য করে। কিন্তু সে উদ্ভিন্ন প্রতিভা তাদের বাধার চাপে হারিয়ে যায় নতুবা সত্যব্রত আঁকড়ে বাধার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। তাঁর আপন প্রয়াসে যতদূর সম্ভব পশ্চাৎবর্তী ধর্ম ও সমাজের জন্য মতবাদ প্রকাশ করেন। তখন তাঁকে কাফির, মরদূত, মোনাফেক, ফাছেক বলে নিন্দা করে বিধর্মীও বলা হয়। তবু তিনি নিজের ধর্ম আঁকড়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অগ্রসর হন, অন্য ধর্মের আশ্রয় নেন না, নিন্দার শত দুর্গন্ধের ভেতর লড়াই করেন, দেশ ছাড়ার জন্য বাধ্য করা হয়, খুন হতে পারেন, মৃত্যুর পর তাঁর জানাজাও জোটে না। লাশটা কুকর দ্বারা ভক্ষিত হয়, দৃষ্টান্ত: কবি বাশার ইবনে সাদ, মনসুর হাল্লাজ। জানাজা না দিয় গোপনে পুঁতে ফেলা হয়, দৃষ্টান্ত কবি হাফিজ। কিন্তু পরবর্তীকালে তাঁরা হয়ে যান ইসলামের গৌরব। ইবনে সিনা, অভেরুশ লাঞ্ছিত হয়ে মৃত্যুভয়ে ইয়োরোপে পালিয়ে গিয়ে বিশ্বের জন্য নতুন আলো সৃষ্টি করেন অন্যরা তাঁদের পুরস্কৃত করলে এখন মুসলমানেরা তাঁদের মুসলিম মনীষী বলে সম্মানিত করেন, তেমনই বাংলায় কাফের কাজী নজরুল ইসলাম এখন জাতীয় কবি। একই আদর্শে ওমর খৈয়াম, তাঁর বৈশিষ্ট্য যেকোনও পরিস্থিতিতে তিনি ধর্ম ও সমাজকে ছেড়ে যাননি, কশাঘাত করেছেন ক্ষুদ্র অস্ত্র নিয়ে এবং পরাজিত করতে না পারলেও স্বজাতির ভেতর অবস্থান করেছেন দৃঢ়ভাবে। তবে তাঁর দর্শন ও কাব্যের জন্য তিনি গোপন মার্গ আবিস্কার করেছিলেন, জীবিতকালে রক্ষণশীলরা সেটা টের পায়নি। পরে খবর পেয়ে তাঁর অনুবাদীদের সঙ্গে অসাধু যুদ্ধ করেছে প্রায় ছয়শ বছর ধরে। এ কাফের বা "invention of blasphemy' এর সম্পদ পেয়ে ইংরেজ কবি এডওয়ার্ড কিটস জেরাল্ড ১৮৬৯ সালে বিশ্বসভায় তা ফাঁস করে দিলেন। জীবন দর্শনের একটা বিপ্লব ঘটে গেল সারা বিশ্বে। মুসলমান সমাজ অন্ধকারে বিমূঢ় থাকলেও তাদেরও ময়লা ঘরের ফাঁক দিয়ে আলো পড়ল। তখন বলল, ইরানের শ্রেষ্ঠ বুজুর্গদের অন্যতম ওমর খৈয়াম
কম দেখান