জলের আগুনÑমানবিকতার অন্তর্গত প্রজ্জ্বলন
কবিতা, প্রকৃতপক্ষে, শব্দের অগ্নিশিখা। মোহাম্মদ ইকবাল তাঁর কাব্যগ্রন্থ জলের আগুন-এ মানবিক অনুভূতির গভীরতম শূন্যতা ও তা থেকে উঠে আসা আলো-অন্ধকারের দ্বন্দ্বকে এক অনন্য ব্যঞ্জনায় তুলে ধরেছেন। এই কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতা যেন এক-একটি অন্তর্গত প্রতীক্ষার ভাষ্য, যেখানে শূন্যতার সঙ্গে প্রতিনিয়ত বোঝাপড়া করে মানবজীবনের গভীরতর সত্যগুলো উন্মোচিত হয়।
যেমন ‘শূন্যতার...
আরো পড়ুন
জলের আগুনÑমানবিকতার অন্তর্গত প্রজ্জ্বলন
কবিতা, প্রকৃতপক্ষে, শব্দের অগ্নিশিখা। মোহাম্মদ ইকবাল তাঁর কাব্যগ্রন্থ জলের আগুন-এ মানবিক অনুভূতির গভীরতম শূন্যতা ও তা থেকে উঠে আসা আলো-অন্ধকারের দ্বন্দ্বকে এক অনন্য ব্যঞ্জনায় তুলে ধরেছেন। এই কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি কবিতা যেন এক-একটি অন্তর্গত প্রতীক্ষার ভাষ্য, যেখানে শূন্যতার সঙ্গে প্রতিনিয়ত বোঝাপড়া করে মানবজীবনের গভীরতর সত্যগুলো উন্মোচিত হয়।
যেমন ‘শূন্যতার প্রতীক্ষা’ কবিতায় আমাদের নিয়ে যায় এমন এক জগতে, যেখানে নিঃসঙ্গতা আর শূন্যতা মিলেমিশে তৈরি করে এক অনবদ্য অনুভূতির সেতু। এখানে শব্দেরা প্রতীকী সেতুরূপে কাজ করে, যা মানবিক অস্তিত্ব আর অসীম শূন্যতার কান্নাকে একত্রে বাঁধে।
‘জলের আগুন’ এই গ্রন্থের শিরোনাম কবিতা, যেন আবেগ ও যন্ত্রণার এক অগ্নি-সমুদ্র। কবি এখানে নিজেকে এক জীবন্ত আগ্নেয়গিরি হিসেবে চিত্রিত করেছেনÑযিনি নিজের বেদনার অগ্নিতে সবকিছু পুড়িয়ে আবার নতুন করে জন্ম দিতে চান। এই কবিতায় আগুনের সাথে জলের সমন্বয় এক অসাধারণ কাব্যিক কৌশল, যা একইসঙ্গে ধ্বংস ও পুনর্গঠনের প্রতীক।
‘অন্ধকারে আগুনের গল্প’ কবিতায় একটি নিঃশব্দ অথচ গভীর আত্মানুসন্ধানের চিত্রকল্প। এখানে অন্ধকার আর আগুন পরস্পরবিরোধী হয়েও সমান্তরালভাবে কবিতার শরীরে মিশে গেছে। ছায়ার মধ্যে আলো খোঁজার এই প্রচেষ্টা আমাদের আত্মার গভীরতম চাহিদার প্রতীক।
জলের আগুন কেবল একটি কাব্যগ্রন্থই নয়; এটি মানুষের অন্তর্গত বোধের এক অনন্য পথচিহ্ন। মোহাম্মদ ইকবাল তাঁর শব্দচিত্র ও ভাবের গভীরতায় যন্ত্রণার অগ্নি থেকে সৃষ্টি করেছেন নতুন জীবনের সম্ভাবনা। প্রতিটি কবিতায় তিনি পাঠককে শূন্যতার স্তব্ধতায় নিমজ্জিত করে ধ্বংস থেকে পুনর্জন্মের উপলব্ধি করান। এই কাব্যগ্রন্থ যেন এক রূপকধর্মী উপাখ্যান, যা আমাদের প্রতিটি অনুভূতিকে বারবার আলোড়িত করে।
ডা. রাহাত ইকবাল চৌধুরী
সহকারী পরিচালক
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঢাকা।
কম দেখান