কবি সৈকত হাবিবকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার কিছু নেই। মেধা ও যুক্তিতে খোলা তলোয়ার, মননে মানবতাবাদী আর প্রাণে বোধ ও বোধির সন্ধানী। কবিতায় তিনি প্রাজ্ঞ এবং ঋজু, একাধিক শব্দের সম্মিলনে নতুন ব্যঞ্জনা সৃষ্টিতে দক্ষ বাজিকর। ‘ঘ্রাণস্বপ্নবেদনাপিপাসা’র এই ‘আত্মরতির ভূগোলে’ তার কবিতা যেন সাহিত্যের খরাক্রান্ত মাঠে ‘এক মন্দ্রিত মেঘ’ নেমে... আরো পড়ুন

কবি সৈকত হাবিবকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার কিছু নেই। মেধা ও যুক্তিতে খোলা তলোয়ার, মননে মানবতাবাদী আর প্রাণে বোধ ও বোধির সন্ধানী। কবিতায় তিনি প্রাজ্ঞ এবং ঋজু, একাধিক শব্দের সম্মিলনে নতুন ব্যঞ্জনা সৃষ্টিতে দক্ষ বাজিকর। ‘ঘ্রাণস্বপ্নবেদনাপিপাসা’র এই ‘আত্মরতির ভূগোলে’ তার কবিতা যেন সাহিত্যের খরাক্রান্ত মাঠে ‘এক মন্দ্রিত মেঘ’ নেমে আসা। যখন তিনি লেখেন ‘নিঃসঙ্গতা, এক গহন দরোজা, যার ভেতর দিয়ে আমি পৌঁছাই নিজের কাছে/হয়তো এক গোপন জানালা, যা দিয়ে দেখি নিজের ভেতর,’ তখন শূন্যতার কথা মনে পড়ে। শূন্যতাকে তিনি বেশ কটি কবিতায় আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে নিয়েছেন, আর ‘শূন্যতার পাঠ’ করতে করতেই অনুভব করেছেন সৃষ্টি আর পূর্ণতার সজীব উপস্থিতি। তাই বলতে পেরেছেন : ‘শূন্যতার মানে পাখি জানে তাই এত তার ডানার বিস্তার’ কখনো কখনো মনে হয় কবিতাগুলো বোধ ও বেদনা থেকে উৎসারিত, কিন্তু একেবারেই ব্যক্তিগত পর্যায়ের নয়। সমাজকে নিয়ে তিনি ভাবেন, এবং ভাবেন বলেই তার অধিকাংশ কবিতা সময় ও সমাজকেন্দ্রিক। তাই দেখি তার উচ্চারণে শাহবাগও হয়ে উঠে ‘স্বপ্নগঙ্গাস্থান’ এবং যে সভ্যতার ঘোড়াটি এখন ‘যন্ত্রে ডাকে,’ তাকে তিনি অভিহিত করেন ‘যন্ত্রহ্রেষা’ বলে। সৈকত হাবিব সেই কবিদের একজন, যাঁরা জীবনের গাঢ় বিষ পান করে স্বভাষার স্বাদ দিয়ে যান। সেজন্যেই তার কবিতা পড়ে মনে হয় ‘জীবনের গভীর স্পর্শে পৃথিবীর ভেতর থেকে জেগে উঠেছে অন্য এক পৃথিবী।’ আর কিছু না বলে শুধু তার একটি কবিতাংশ উদ্ধৃত করি, তাতেই পাঠক কবির শক্তিমত্তা টের পেয়ে যাবেন : ‘ঘোড়াউত্রা নদীটি কী বিস্ময় সমতলে যেন এক সচল বিছানা জীবনের বিপুল চলচ্ছবি তীরজুড়ে... মনে পড়ে গেল ভ্যান গগের স্নানরত রমণীরা জীবন ও জলের সঙ্গমে স্বপ্নীল আর কুরোশাওয়ার ‘ড্রিমসে’র এক দৃশ্য... এইভাবে ঘোড়াউত্রা ও গমখেত, গগ ও কুরোশাওয়া শিল্প আর জীবনের স্রোত, ভিতর ও বাহির আমার সত্তার ভিতর জাগায় এক দূরাগত বোধ আলোজলহাওয়া।’ আমার বিশ্বাস এ সংগ্রহের কবিতাগুলো পাঠকের সত্তার ভিতরে বোধের আলোজলহাওয়া জাগাবে। কবির চান্দ কবি ও কথাসাহিত্যিক কম দেখান