পথের পাঁচালীর অমর স্রষ্টা বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে এবং মৃত্যু ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে। চব্বিশপরগণা জেলার অন্তর্গত বনগ্রাম মহকুমার ইছামতী নদী তীরস্থ ব্যারাকপুর গ্রামে ছিল তাঁর পৈত্রিক নিবাস। তাঁর পিতা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় শাস্ত্রী এবং মাতা মৃণালিনী দেবী। পিতামাতার পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। বিভূতিভূষণ...
আরো পড়ুন
পথের পাঁচালীর অমর স্রষ্টা বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে এবং মৃত্যু ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে। চব্বিশপরগণা জেলার অন্তর্গত বনগ্রাম মহকুমার ইছামতী নদী তীরস্থ ব্যারাকপুর গ্রামে ছিল তাঁর পৈত্রিক নিবাস। তাঁর পিতা মহানন্দ বন্দ্যোপাধ্যায় শাস্ত্রী এবং মাতা মৃণালিনী দেবী। পিতামাতার পাঁচ সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতার পেশা ছিল কথকতা এবং তিনি ছিলেন কিছুটা ভবঘুরে প্রকৃতির; যার ফলে সংসারে আর্থিক সচ্ছলতা আসেনি।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের শিক্ষা শুরু হয়েছিল তার পিতার কাছে। অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তাঁর পিতার মৃত্যু হয়। ফলে নানা দুঃখকষ্টের ভেতর দিয়ে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাস করেন। অতঃপর কলিকাতার রিপন কলেজ থেকে ১৯১৬ সালে প্রথম বিভাগে আই.এ এবং ১৯১৮ সালে ডিসটিংশনে বি.এ পাস করেন। তিনি এম.এ এবং ল ক্লাশে ভর্তি হয়েছিলেন, কিন্তু নানা কারণে সেসব পড়া তাঁর সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি।
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম স্ত্রী গৌরী দেবী বিয়ের এক বছর পর মারা যান। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর কিছুদিন তিনি সন্ন্যাসীর মগ্রে জীবন অতিবাহিত করেন। ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে তিনি রমা দেবীকে বিবাহ করেন। মাইনর স্কুলে শিক্ষকতা দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়েছিল। পরে তিনি উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। কিছুদিন তিনি 'গোরক্ষণী সভা'র প্রচারকের চাকরি নিয়ে বাংলা, আসাম, ত্রিপুরা ও আরাকানের বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ করেন। তিনি খেলাত ঘোষ এস্টেটের অ্যাসিটেন্ট ম্যানেজার ছিলেন এবং এই জমিদারির ভাগলপুর বিভাগের ভারপ্রাপ্ত হয়ে তিনি ভাগলপুরের 'বড় বাসা' নামক গৃহে বাস করেছেন। এখানেই তাঁর অমর উপন্যাস পথের পাঁচালী রচিত হয়েছিল। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালী প্রকাশিত হয় ১৯২৯ সালে এবং অপরাজিত (১ম ও ২য় খন্ড) প্রকাশিত হয় ১৯৩২ সালে। এই দুই উপন্যাস মিলে মূলত বিভূতিভূষণের মহাকাব্যিক উপন্যাস। তাঁর অন্যান্য উপন্যাস হচ্ছে- দৃষ্টিপ্রদীপ (১৯৩৫), আরণ্যক (১৯৩৯), আদর্শ হিন্দু হোটেল (১৯৪০), বিপিনের সংসার (১৯৪১), দুই বাড়ী (১৯৪১), অনুবর্তন (১৯৪২), দেবযান (১৯৪৪), কেদার রাজা (১৯৪৫), অথৈই জল (১৯৪৭), ইছামতী (১৯৫০), অশনি সংকেত (১৩৬৬ বঙ্গাব্দ), দম্পতি (১৯৫২) ইত্যাদি। এছাড়া তাঁর রচিত কয়েকটি গল্পগ্রন্থ, ভ্রমণ কাহিনী, কিশোর পাঠ্য গ্রন্থ এবং বিবিধ বিষয় নিয়ে গ্রন্থ প্রকাশিত হয়।১
কম দেখান