লেখক হিসেবে নিজের রচনার বিশ্লেষণ করা কখনোই সহজ নয়। প্রকাশক জানতে চেয়েছিলেন—“নৌকাডুবি” লিখতে আমার প্রেরণা কী ছিল। সত্যি বলতে, এর সূচনা কোনো গভীর পরিকল্পনা থেকে নয়, বরং প্রকাশকের তাগিদ থেকেই। গল্পটির জন্ম যেন একরকম দায়বদ্ধতার মধ্য দিয়ে।
সে সময় গল্পের রুচি বদলে গিয়েছিল—ঘটনার চেয়ে মানুষের মনের জটিলতা ও মানসিক টানাপোড়েন পাঠকের...
আরো পড়ুন
লেখক হিসেবে নিজের রচনার বিশ্লেষণ করা কখনোই সহজ নয়। প্রকাশক জানতে চেয়েছিলেন—“নৌকাডুবি” লিখতে আমার প্রেরণা কী ছিল। সত্যি বলতে, এর সূচনা কোনো গভীর পরিকল্পনা থেকে নয়, বরং প্রকাশকের তাগিদ থেকেই। গল্পটির জন্ম যেন একরকম দায়বদ্ধতার মধ্য দিয়ে।
সে সময় গল্পের রুচি বদলে গিয়েছিল—ঘটনার চেয়ে মানুষের মনের জটিলতা ও মানসিক টানাপোড়েন পাঠকের কাছে বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠছিল। তাই এই উপন্যাসে আমি মানুষের মনোজগতের এক ভুল, বিভ্রান্তি ও মানসিক সংঘাত তুলে ধরতে চেয়েছি।
প্রধানত প্রশ্নটি ছিল—এক নারীর মনে বিবাহ-সংস্কার ও ভালোবাসার দ্বন্দ্ব কতটা গভীর হতে পারে? সমাজের শিকড়-গাঁথা বিশ্বাসের প্রভাবে সে কি অজান্তে গড়ে ওঠা বন্ধন ছিন্ন করে অচেনা স্বামীর দিকে ফিরে যেতে পারে? এই মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধানই গল্পটির মূল সুর।
এখানে ট্র্যাজেডির ভার বহন করেছে রমেশ—এক হতভাগ্য মানুষ, যিনি নিয়তির ভুলের ফাঁদে পড়ে নিজের জীবনকেই হারিয়েছেন।
যদি এই গল্পে বেদনার সঙ্গে কবিত্বের স্পর্শ পাঠকের মনে অনুরণন জাগাতে পারে, তবে সেটাই হবে আমার একমাত্র প্রাপ্তি।
— রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
কম দেখান