একাত্তরের স্বাধীনতা-উত্তর চুয়াত্তরের মহামন্বন্তর।
যুদ্ধ আর অগণন হত্যা-ক্লান্ত জাতির হৃদপিণ্ডে ভয়ঙ্কর আঘাত। ক্ষুধা আর গণমৃত্যুর প্রতিপক্ষ রক্তাক্ত স্বাধীনতা। স্বাধীনতার সূর্যকে ক্ষুধার আর্তনাদ যেন খানখান করে ভেঙে দিতে চায়। ভয়ঙ্কর আর বীভৎস ক্ষুধার যন্ত্রণাকে বাঙালিরা ভোগ করল যেন অজ্ঞাত কোনো অভিশাপের ফল হিসেবে। মানুষ আর মনুষ্যত্বকে একাকার করে দিয়েই ঘনিয়ে আসে চুয়াত্তরের...
আরো পড়ুন
একাত্তরের স্বাধীনতা-উত্তর চুয়াত্তরের মহামন্বন্তর।
যুদ্ধ আর অগণন হত্যা-ক্লান্ত জাতির হৃদপিণ্ডে ভয়ঙ্কর আঘাত। ক্ষুধা আর গণমৃত্যুর প্রতিপক্ষ রক্তাক্ত স্বাধীনতা। স্বাধীনতার সূর্যকে ক্ষুধার আর্তনাদ যেন খানখান করে ভেঙে দিতে চায়। ভয়ঙ্কর আর বীভৎস ক্ষুধার যন্ত্রণাকে বাঙালিরা ভোগ করল যেন অজ্ঞাত কোনো অভিশাপের ফল হিসেবে। মানুষ আর মনুষ্যত্বকে একাকার করে দিয়েই ঘনিয়ে আসে চুয়াত্তরের দুর্ভাগ্য। মানবিক সম্পর্কগুলো ভেঙে লুটিয়ে পড়ে স্বাধীন ভূখণ্ডে। অথচ একদিকে মৃত্যুক্ষুধা আর অন্য প্রান্তে মানুষরূপ পশুদের সম্পদের লোলজিহ্বা। ভয়াবহ নিষ্ঠুর বাস্তবতা। ক্ষুধা গিলে খায় নর-নারীর প্রেম। ভালোবাসার এই পরাভব যেন স্বপ্ন-সুখেরই বিকল্প। একাত্তরের রক্তস্নাত এই দেশ তার ভূখণ্ডের বড় একটি অংশ ছেড়ে দেয় কবর আর গণকবরের জন্য। একাত্তরের যুদ্ধ আর চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষে মৃতদের কবরের এমনি পাশাপাশি অবস্থান, দিন শেষে রাতের অন্ধকারে নতুন শিহরণ জাগানো দুনিয়া তৈরি করে। এই যে নিষ্ঠুর বাস্তবতা তার সাহিত্যিক বর্ণনায় তাই বিকল্প গদ্যের পথ ধরতে হয়। অতিপ্রাকৃত ভিন্ন-এক দুনিয়া নির্মাণের জন্য গদ্য ভাষাকেও তার শরীরী বদল ঘটাতে হয়। অসংখ্য চিত্রকল্প, উপমা আর অলঙ্কার ভিন্ন এই ভয়ঙ্করের রূপ বর্ণনা লেখকের পক্ষে ছিল প্রায় অসাধ্য। বাস্তবকাল আর পৌরাণিক কালকে একাকার না-করে অন্য পথ ছিলনা। স্বপ্ন-দুঃস্বপ্ন, বর্তমান অতীতের রং ছাড়া এর চিত্রায়ণও ছিল অজানা। তাই সারা আখ্যানে মানব জীবন যেন এক দুর্ভাগ্যের প্রতিকল্প হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে রয়েছে। জিজ্ঞাসা এই, কে সেই অলৌকিক শিশু? মহাশূন্যে কোথায় হারিয়ে গেল শিশুটি?
কম দেখান