কিশোরদের জন্য লেখা উপন্যাসের মধ্যে সেগুলোই সেরার শিরোপা পায় যাদের মধ্যে থাকে অভিযানের উত্তেজনা, অজানাকে উপলব্ধির আনন্দ। আমাদের সাহিত্যের সেরা কিশোর কাহিনীগুলোর অন্যতম হলো শিবরাম চক্রবর্তীর ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’ উপন্যাসটি। শিবরাম এ উপন্যাসে কাঞ্চনকে যে পরিবেশের মধ্যে প্রোথিত করেছিলেন তা মূলত শহর কলকাতার। এরিক কাস্টনারের এমিল যেমন গ্রাম থেকে এসে...
আরো পড়ুন
কিশোরদের জন্য লেখা উপন্যাসের মধ্যে সেগুলোই সেরার শিরোপা পায় যাদের মধ্যে থাকে অভিযানের উত্তেজনা, অজানাকে উপলব্ধির আনন্দ। আমাদের সাহিত্যের সেরা কিশোর কাহিনীগুলোর অন্যতম হলো শিবরাম চক্রবর্তীর ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’ উপন্যাসটি। শিবরাম এ উপন্যাসে কাঞ্চনকে যে পরিবেশের মধ্যে প্রোথিত করেছিলেন তা মূলত শহর কলকাতার। এরিক কাস্টনারের এমিল যেমন গ্রাম থেকে এসে বার্লিনের রাজপথে নানা অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে নিজের ব্যক্তিত্বকে গড়ে তুলেছিল, তেমনি কাঞ্চনও কলকাতার রাজপথে আত্ম-আবিষ্কারে সমর্থ হয়েছিল। আমাদের চেনা কলকাতার পথগুলো ও মানুষজন কিশোর কাঞ্চনের দেখার মধ্য দিয়ে অত্যন্ত সহজ ও জীবন্ত হয়ে উঠতে পেরেছিল। কলকাতার পথ ও মানুষ যে একটি বিশ্বাসযোগ্য অভিযানের উপাদান হতে পারে তা ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’র আগে কেউ দেখতে পেরেছেন কি-না সন্দেহ। এমন নয় যে কাঞ্চনের দেখাকে স্বাতন্ত্র্য দিতে লেখক খুব অসম্ভব বর্ণনার আশ্রয় নিয়েছেন। কাঞ্চন যেসব অভিজ্ঞতা পেতে পেতে এগিয়ে চলে সেগুলো নিতান্তই ঘরোয়া ও আপাতনিরীহ। তবু জীবনের প্রবাহের মধ্যে প্রোথিত থেকে তা হয়ে ওঠে ব্যতিক্রমী ও উজ্জ্বল। কাঞ্চনের টাকা অর্জনের পদ্ধতি পাঠকের মনে খানিক খটকা লাগালেও উদ্দেশ্যের সততায় তা আলাদা মাত্রা পেয়ে যায়। ‘বাড়ি থেকে পালিয়ে’ কলকাতার রাস্তায় এসে কাঞ্চন নিজেকে হারায় ও খুঁজে পায়। শহরের অ্যাসফল্টে হেঁটেও এমিল তার মাকে সর্বদা মনে রেখেছে, কাঞ্চনের মনও অধিকার করে ছিল তার মা। মায়ের ভাবনার গভীরতা দিয়েই মানুষ পৌঁছায় বিশ্বজনীনতায়। ─বিষ্ণু বসু
কম দেখান