এই খণ্ডে আইনস্টাইনের জীবনের বিভিন্ন ঘটনার বিশ্লেষণের মাধ্যমে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ার একটি যৌক্তিক সমালোচনা করা হয়েছে। ১৯১৯ সালে সাধারণ আপেক্ষিক বা অভিকর্ষ তত্ত্বের বিতর্কিত পরীক্ষামূলক প্রমাণের পর প্রচার মাধ্যমে আইনস্টাইনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। ১৯২১ সালে বিপুল সমারোহে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের পর জার্মান সরকারি চাকরিজীবী বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন...
আরো পড়ুন
এই খণ্ডে আইনস্টাইনের জীবনের বিভিন্ন ঘটনার বিশ্লেষণের মাধ্যমে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়ার একটি যৌক্তিক সমালোচনা করা হয়েছে। ১৯১৯ সালে সাধারণ আপেক্ষিক বা অভিকর্ষ তত্ত্বের বিতর্কিত পরীক্ষামূলক প্রমাণের পর প্রচার মাধ্যমে আইনস্টাইনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। ১৯২১ সালে বিপুল সমারোহে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের পর জার্মান সরকারি চাকরিজীবী বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন বিশ্ব জায়নবাদী আন্দোলনের (World Zionist Movement) প্রাণপুরুষ হয়ে উঠেন। পরবর্তীকালে আইনস্টাইন সদ্য বিকাশমান কোয়ান্টাম বলবিদ্যার (quantum mechanics) আপোষহীন প্রত্যক্ষ বিরোধিতা করেন। অন্যদিকে একীভূত ক্ষেত্র তত্ত্ব (unified field theory) প্রতিষ্ঠার আড়ালে তিনি সুদীর্ঘ তিন দশকের নিষ্ফল বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ডকে ঢাকার প্রবণতা প্রদর্শন করেন। এই থেকে আইনস্টাইনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা প্রক্রিয়ার অসারতা মূর্ত হয়ে উঠে। স্বভাবজাত বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ডকে উপেক্ষা করে জায়নবাদী রাজনৈতিক আন্দোলনের সাথে পরোক্ষ সম্পৃক্ততার প্রতিক্রিয়া হিসাবে আইনস্টাইনকে ঘিরে জার্মানিতে ইহুদী বিদ্বেষের মাত্রা (anti-semitism) বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফলে, এক দশকের ব্যবধানে এডলফ হিটলার ও তার নাৎসী বাহিনীর জার্মানির রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আরোহণ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠে। এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন সময়ে সংঘটিত ইহুদী নিধন যজ্ঞ হলোকাস্টে আইনস্টাইনের কর্মকাণ্ড প্রভাবকের (catalyst) ভূমিকা পালন করেছিল। অন্যদিকে, তিনি স্বযাচিত হয়ে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রকে জার্মানিতে আবিষ্কৃত পরমাণু কেন্দ্রীন ভাঙনের শৃঙ্খল প্রক্রিয়ার ভিত্তিতে মানব ইতিহাসে অভূতপূর্ব বিপুল জনবিধ্বংসী পরমাণু বোমা তৈরির প্ররোচণা দেন। ফলে, বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক শীতলযুদ্ধ, কোরিয়া ও ভিয়েতনাম যুদ্ধের সূচনা হয়। সর্বোপরি, বৌদ্ধিক বিবর্তনবিরোধী প্রক্রিয়ায় ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় আইনস্টাইনের পরোক্ষ ভূমিকাকে অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। এই গ্রন্থে আইনস্টাইনের বিজ্ঞান বিমুখীতা, অপেশাদার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং ব্যক্তিগত জীবনের কয়েকটি ঋণাত্মক বৈশিষ্ট্যের সমালোচনা করা হয়েছে। পরিশেষে, প্রকৃতি বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের স্বভাবজাত বৈজ্ঞানিক কর্মকাণ্ডের প্রতি একনিষ্ঠতার উপর আলোকপাত করা হয়েছে।
কম দেখান