আমি বড় হয়েছি রামপুরায়, একটা একান্নবর্তী পরিবারে। যাবতীয় কাজ ও অকাজের সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন ওয়াসি ভাই; আমার বড় চাচার ছেলে। প্রথম জীবনে আমাদের স্বপ্ন ছিলো দেশসেরা সন্ত্রাসী হবার। কুখ্যাত কালা ফারুক (ছদ্মনাম) ভাই আমাদের এক সন্ধ্যায় বলেছিলেন, ষোলো বছরের শিক্ষাজীবন তাকে দিয়েছে বেকারত্ব, বাবা-মায়ের চিকিৎসা না করাতে পারা এবং প্রেমিকা...
আরো পড়ুন
আমি বড় হয়েছি রামপুরায়, একটা একান্নবর্তী পরিবারে। যাবতীয় কাজ ও অকাজের সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিলেন ওয়াসি ভাই; আমার বড় চাচার ছেলে। প্রথম জীবনে আমাদের স্বপ্ন ছিলো দেশসেরা সন্ত্রাসী হবার। কুখ্যাত কালা ফারুক (ছদ্মনাম) ভাই আমাদের এক সন্ধ্যায় বলেছিলেন, ষোলো বছরের শিক্ষাজীবন তাকে দিয়েছে বেকারত্ব, বাবা-মায়ের চিকিৎসা না করাতে পারা এবং প্রেমিকা হারানোর বেদনা৷ আর মাত্র ছয় বছরের সন্ত্রাস জীবনে তিনি পেয়েছেন সম্মান, গাড়ি, বাড়ি, অর্থ, সম্পদ এবং একাধিক প্রেমিকা। কাজেই এখনই সময় শিক্ষাজীবন ছেড়ে সন্ত্রাসজীবন বেছে নেওয়ার।
ব্রেইনওয়াশে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা নতুন করে 'এইম ইন লাইফ' ঠিক করি। ভাবি, কোমরে ওয়ালথার পিপিকে গুজে ভবিষ্যতে অত্র এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব আমরাই কায়েম করবো। এদিকে আবার আছে প্রচন্ড বই পড়ার নেশা, কবিতা লেখার অনুপ্রেরণা এবং রকস্টার হবার আকাঙ্ক্ষা!
ঘটনাগুলো ম্যাজিকাল নব্বই দশকের। যে সময়ে মাসে একটা করে চিঠি লিখলেও কারও সাথে দূরত্ব কমতো না। শুক্রবার মানে ছিলো পরিবারের সবাই একসাথে টিভির সামনে বসে বাংলা সিনেমা দেখার আনন্দময় দিন। তখন রং নম্বরে টেলিফোন চলে গিয়ে প্রেম হতো। অপরিচিত কেউ হুটহাট ফোন করে ছয়-সাত বিল্ডিং পরের প্রতিবেশীকে চাইলে তাকে দৌড়ে গিয়ে ডেকে আনতে কেউ ক্লান্তি বোধ করতো না।
ইচ্ছে ছিলো নিজের কৈশোর এবং নব্বই দশকের শেষভাগে ডুব দেওয়ার। আপনারও যদি এক বিষন্ন বিকেলে এমন ইচ্ছে জাগে, তবে আমন্ত্রণ রইলো 'ইশকুল খুইলাছে'- এর পাতায়।
কম দেখান