হরিহর রায় একজন অতি সাধারণ ব্রাহ্মণ। স্ত্রী সর্বজয়া আর শিশু কন্যা দুর্গাকে নিয়ে নিশ্চিন্দিপুর গ্রামে তার বাস। তাদের সাথে আরও থাকেন ইন্দিরা ঠাকুরণ। বৃদ্ধা সম্পর্ক হরিহরের দূর সম্পর্কের আত্মীয়। তার দেখাশোনায় কেউ আর আশ্রর ভিটা না থাকায় তিনি আশ্রয় নেন হরিহরের বাড়িতে। তাঁর কিছুদিন পরই সর্বজয়ার একটি ছেলে সন্তান হয়।...
আরো পড়ুন
হরিহর রায় একজন অতি সাধারণ ব্রাহ্মণ। স্ত্রী সর্বজয়া আর শিশু কন্যা দুর্গাকে নিয়ে নিশ্চিন্দিপুর গ্রামে তার বাস। তাদের সাথে আরও থাকেন ইন্দিরা ঠাকুরণ। বৃদ্ধা সম্পর্ক হরিহরের দূর সম্পর্কের আত্মীয়। তার দেখাশোনায় কেউ আর আশ্রর ভিটা না থাকায় তিনি আশ্রয় নেন হরিহরের বাড়িতে। তাঁর কিছুদিন পরই সর্বজয়ার একটি ছেলে সন্তান হয়। সর্বজয়া বৃদ্ধাকে পছন্দ করতেন না। তার ধারণা ছিল তার কন্যা দুর্গা, ইন্দিরা ঠাকুরণকে তাব চেয়ে বেশি ভালোবাসে। তাই, সামান্য একটি কারণে বৃদ্ধাকে বের করে দেওয়া হয় তার কুঁড়েঘর থেকে, অসহায় বৃদ্ধাটি তার মৃত্যুর মুহূর্তে যখন আশ্রয়ের জন্য অনুরোধ করে, সর্বজয়া তাকে কোনরকম আশ্রয় দিতে নারাজি হয়।
পেষ পর্যন্ত ইন্দিবা ঠাকুরদের নির্মম মৃত্যু হয় চালের গুদামে। এর চার-পাঁচ বছর পর সর্বজয়ার ছেলে অপু প্রকৃতির সৌন্দর্যের প্রতি কৌতুহলি হতে থাকে আর সংবেদনশীল হতে থাকে। দুর্গা আর অণু বেশির ভাগ সময় জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানো, আদিবাসী খেলায় অংশগ্রহন আর চুরি করে ফুল ও ফল পারার মতো দুঃসাহসিক কাজের জন্য বাইরে ঘুরে ঘুরে বেড়াত। এরপর অপু তার গ্রামের একটি পাঠশালায় ডর্তি হয়, আর সেখানে মূলত গ্রামের বেশ কিছু প্রবীণরা জড়ো হয়ে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতো। হরিহর একদিন অপুকে সাথে নিয়ে গেল তার এক মক্কেলের বাড়িতে। সেখানে যাওয়ায় অপু প্রথম দেখতে পায় বাইব্রের জগতের ঝলক আর তার মন আনন্দে আর উত্তেজনায় ভরে উঠেছিল। এছাড়াও একচেটিয়া গ্রামীণ জীবনের প্রবাহে বৈচিত্র্য আনে গ্রাম্য উৎসব, মেলা, এবং যাত্রা ইত্যাদি। এরপর, হঠাৎ অলোচ্ছ্বাসের মতো সবাইকে শোক সাগরে ভাসিয়ে মারা যায় অস্থির চিত্তের নিরীহ এক শিশু নারীসত্তা দুর্গা। একা হয়ে যায় অপু, হয়ে পড়ে সঙ্গীহীন। জীবিকা অর্জনের জন্য মরিয়া হয়ে হরিহর দীর্ঘ সময়ের জন্য বাড়ি ছেডে
চলে যায় আর সংগ্রাম করতে থাকে।
তারপর একদিন বাড়ী ফিরে হরিহর সিদ্ধান্ত নিলো সে শহরের দিকে যাবে সপরিবারে গমন করে নতুন জীবিকা করবে। তাই সব গোছগাছ করে রওনা হয় স্টেশনের দিকে। এরপর কলকাতার ট্রেনে চেপে যাওয়ার সময় তারা ফেলে গেল তাদের জীবনে নিশ্চিন্দিপুত্রব সব দুঃখ আয সুখের স্মৃতি।
কম দেখান