ইসলামের অভ্যুদয়ের পর থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বে একক খিলাফতের কর্তৃত্বাধীনে অথবা ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের সার্বভৌম সরকারের অধীনে যে সমৃদ্ধ ও যৌগিক সভ্যতার বিকাশ ঘটেছে তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দানের উদ্দেশ্যে বর্তমান আলোচনার অবতারণা। উক্ত বিষয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানা ভাষায় বহু গ্রন্থ রচিত হয়েছে। বাংলা ভাষায় এ ধরনের বইয়ের...
আরো পড়ুন
ইসলামের অভ্যুদয়ের পর থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত মুসলিম বিশ্বে একক খিলাফতের কর্তৃত্বাধীনে অথবা ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের সার্বভৌম সরকারের অধীনে যে সমৃদ্ধ ও যৌগিক সভ্যতার বিকাশ ঘটেছে তার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দানের উদ্দেশ্যে বর্তমান আলোচনার অবতারণা। উক্ত বিষয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানা ভাষায় বহু গ্রন্থ রচিত হয়েছে। বাংলা ভাষায় এ ধরনের বইয়ের অপ্রতুলতার কথা ভেবে আমি এ দুরূহ কাজে আত্মনিয়োগ করেছি। 'মুসলিম সভ্যতা' বলতে কী বোঝায়, প্রথমে পাঠকদেরকে সে সম্বন্ধে কিছু ধারণা দেয়া প্রয়োজন মনে করি। উল্লিখিত গৌরব-যুগের সভ্যতাকে 'আরব সভ্যতা', 'ইসলামি সভ্যতা' ও 'মুসলিম সভ্যতা' ইত্যাদি বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়।
যেহেতু শুধু আরব জাতির লোকেরাই এ সভ্যতার ধারক ও বাহক ছিল না, তাই এর 'আরব' নামকরণ সঠিক নয়। ইসলাম ধর্ম যেসব দেশে প্রাধান্য লাভকরেছে, সেখানকার আরব-অনারব সকল জাতির লোক এ সভ্যতার বিকাশে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। তবে এর 'আরবি' নামকরণের পেছনে কিছুটা যুক্তিযুক্ততা রয়েছে, কারণ এ সভ্যতার বৃহদাংশ আরবি ভাষায় লিখিত বা উৎকীর্ণ। কুরআনের ভাষা, রাষ্ট্রের ভাষা এবং সাহিত্য ও সংস্কৃতির ভাষা হিসেবে আরবি মুসলিম জগতের সর্বত্র পঠিত, কথিত ও লিখিত হতো। বাগদাদ থেকে একদিকে কর্ডোভা ও অন্যদিকে কাশগড় পর্যন্ত অঞ্চলে আরবির একচ্ছত্র আধিপত্য বিরাজিত ছিল। সাথে সাথে গ্রিক, সিরীয়, কপ্ট, কুর্দি, বার্বার, তুর্কি ও ফার্সি প্রভৃতি আঞ্চলিক ভাষাসমূহ সমভাবে ব্যবহৃত হতো। এ সবের মধ্যে ফার্সি ভাষা দশম শতাব্দীতে পুনর্জীবন লাভ করে। সোনালি যুগের সভ্যতার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ আরবি ভাষার সমান্তরালে তখন থেকে ফার্সি ভাষায় রচিত ও গ্রথিত হতে থাকে। পূর্বাঞ্চলীয় মনীষীদের অনেকেই এ সময় আরবি ও ফার্সি উভয় ভাষায় সুপণ্ডিত ছিলেন এবং নিজেদের সুবিধা ও ইচ্ছানুযায়ী জ্ঞানের বিশেষ ক্ষেত্রে উভয় ভাষায় তাঁদের প্রজ্ঞার স্বাক্ষর রেখেছেন। তুর্কি ভাষায়
উল্লেখযোগ্য অবদান ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতাব্দীর পূর্বে আরম্ভ হয়নি।
কম দেখান