প্রথম ভালোবাসা ক্রিকেট কিন্তু সংসার ফুটবলের সঙ্গে
আমার ছেলেবেলায় সিলেটের পরিবেশ ছিল আসাম ঘেঁষা। স্কুল জীবনে প্রথম ভালোলাগা তৈরি হয় ক্রিকেটে। সে সময় শীতের তিন মাস ক্রিকেট খেলা হতো এবং এটি ছিল অভিজাত খেলা। ১৯৪৭ সালে টাউন একাদশে খেলার সুযোগ পাই। আমাদের বিপক্ষের খেলোয়াড় সবাই ছিল ব্রিটিশ নাগরিক। আমাদের খেলা হতো...
আরো পড়ুন
প্রথম ভালোবাসা ক্রিকেট কিন্তু সংসার ফুটবলের সঙ্গে
আমার ছেলেবেলায় সিলেটের পরিবেশ ছিল আসাম ঘেঁষা। স্কুল জীবনে প্রথম ভালোলাগা তৈরি হয় ক্রিকেটে। সে সময় শীতের তিন মাস ক্রিকেট খেলা হতো এবং এটি ছিল অভিজাত খেলা। ১৯৪৭ সালে টাউন একাদশে খেলার সুযোগ পাই। আমাদের বিপক্ষের খেলোয়াড় সবাই ছিল ব্রিটিশ নাগরিক। আমাদের খেলা হতো বালিশিরা লংলা ভ্যালি, লস্করপুর ভ্যালি ক্লাব ইত্যাদিতে। বালিশিরা ভ্যালি ক্লাবের নিজস্ব মাঠ ছিল, যে মাঠে ছোট প্লেন নামানো যেত। এছাড়া তাদের ছয়টি টেনিস কোর্ট ও বিলিয়ার্ড বোর্ড ছিল। লংলা ভ্যালিরও নিজস্ব ক্রিকেট মাঠ ছিল, তাতে ছিল চারটি লনটেনিস কোর্ট। লস্কর ভ্যালিতে ছিল নিজস্ব ক্রিকেট গ্রাউন্ড ও ফুটবলের জন্য আলাদা মাঠ। বালিশিরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় ঐতিহ্যবাহী এলাকা। এখনো ঢাকা থেকে এসে সেখানে বিভিন্ন খেলা আয়োজন করা হয়। তবে তার আগের সেই জৌলুস নেই। ক্রিকেট খেলার প্রথমদিকে প্রায় সবাই ছিলেন ইংরেজ খেলোয়াড়। তাঁদের মধ্যে যাঁদের নাম আমার মনে আছে, তাঁরা হলেন স্টবিয়ার, টম কিং, ৩৪ কালীন ইংল্যান্ডের কাউন্টি খেলোয়াড় ক্যাম্প কর্ম। বাঙালি খেলোয়াড়দের মধ্যে ছিলেন পল রশিদ, হারুন-আর-রশিদ, আজিজ আহমদ (পাঞ্জাবি) প্রমুখ।
বাবা বলতেন, ক্রিকেট খেলা আমাদের জন্য নয়। এই খেলাতে ভালো করার জন্য পাকিস্তানের লাহোর বা ভারতের বোম্বাইয়ে (বর্তমানে মুম্বাই) যাবার পরামর্শ দিতেন। বাবার এই কথা সত্যি হয় ১৯৪৭ সালে। আমরা মানে সিলেট,
আসামের সঙ্গে থাকবে না পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে থাকবে, তা নির্ধারণের জন্য ১৯৪৭ সালের ৫ ও ৬ জুলাই গণভোটের ব্যবস্থা করা হয়। আসামের পক্ষে থাকতে চাইলে 'কুঁড়েঘর' প্রতীক এবং পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে থাকতে চাইলে 'কুড়াল' প্রতীকে ভোট দিতে হবে। এটি আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। কারণ ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের মাধ্যমে আমরা আসামের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছিলাম এবং ১৯১১ সালে বঙ্গভঙ্গ রোহিত হলেও সিলেটকে আসামের সঙ্গে রেখে দেওয়া হয়। ১৭ জুলাই এই নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়। ফল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ভাগ্য নির্ধারণ হয় পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্গে। এই ভোট দীর্ঘ ৪২ বছর পর সিলেটকে আবার পূর্ব পাকিস্তান (বাংলার)-এর সঙ্গে যুক্ত করে। ফলশ্রুতিতে সমাজের উঁচু শ্রেণির যাঁরা ক্রিকেট পরিচালনা করতেন, তাঁরা প্রায় সবাই সিলেট ছেড়ে ভারতে চলে যান। তখন ক্রিকেটে এক গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হয়। এই
ক্রীড়াঙ্গনের ফেলে আসা দিনগুলো ১১
কম দেখান