যৌবনকালে যুবকদের মনে অহঙ্কার এবং ক্রোধ সর্বদাই লেগে থাকে। নিজে যেন সে একটা মস্ত বড় দরের মানুষ। পরের সামান্য প্রতিবাদে ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠা তার স্বভাব। ধীরচিত্তে বিবেচনা করবার স্বভাব যুবকদের মোটেই নাই। যুবকদের গায়ের জোরে আস্থা খুব বেশি। বিচার-বুদ্ধি, বিবেকের দাবি তাদের কাছে নাই। ঔদ্ধত্য প্রকাশ তাদের স্ব-প্রকৃতি। যুবকেরাই যুদ্ধের...
আরো পড়ুন
যৌবনকালে যুবকদের মনে অহঙ্কার এবং ক্রোধ সর্বদাই লেগে থাকে। নিজে যেন সে একটা মস্ত বড় দরের মানুষ। পরের সামান্য প্রতিবাদে ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠা তার স্বভাব। ধীরচিত্তে বিবেচনা করবার স্বভাব যুবকদের মোটেই নাই। যুবকদের গায়ের জোরে আস্থা খুব বেশি। বিচার-বুদ্ধি, বিবেকের দাবি তাদের কাছে নাই। ঔদ্ধত্য প্রকাশ তাদের স্ব-প্রকৃতি। যুবকেরাই যুদ্ধের যোগ্য। লড়াই করা, নিজের জীবনের মায়া না করা ওদের স্বভাব। নিজে ছোট বা দুর্বল, পরাজয়ের বিপদ তার ভাগ্যেও ঘটতে পারে একথা সে মোটেই বিশ্বাস করে না।
যুবকের ঔদ্ধত্যের সম্মুখে যারা ঔদ্ধত্য প্রকাশ করতে চায়, তারা বড় ঠকে। যুবক কোনোমতে দমে না। যৌবনের শক্তি অতি প্রচণ্ড। যৌবন শক্তির কাছে কত সেনাপতিকে পরাজয় স্বীকার করতে হয়েছে।
যুবকদের মনুষ্যত্বের কাছে নিবেদন কর-তার সঙ্গে প্রেম নিবেদন কর, নত হও-তার বিচারবুদ্ধির আশ্রয় নাও, তার দয়া ভিক্ষা কর, তা হলেই তাকে জয় করতে পারবে। সে তোমার হবে দাস এবং অনুগত বন্ধু।
মধুর ব্যবহার করাই যুবককে জয় করবার প্রধান অস্ত্র। সে সম্মান চায় না-সে চায় ভালোবাসা; সদ্ব্যবহার এবং প্রেম। প্রেম ও সদ্ব্যবহার তাকে লমিতো করে।
যুবক জীবনে দুর্বলতা কোথায়? মধুর ব্যবহারের সম্মুখে, সহানুভূতিতেই সে দুর্বল। আর কোনো ক্ষেত্রে সে দুর্বল নয়। তরবারি দেখে, আগুন দেখে, কারাগারে, ফাঁসিতে-কিছুতেই তার দর্পিত প্রাণ কাবু হয় না-যদি বাঁচতে চাও, তবে তার সঙ্গে সন্ধি কর; তবে কখনও তার সঙ্গে নীরস কঠিন ব্যবহার করো না।
যুবকেরা পাগল, বারুদের মতো সহজেই যুবকপ্রাণে আগুন ধরে। এদেরকে জননীর মতো 'বাবা' বলে স্নেহ করাই উচিত। কারণ এদের মধ্যে স্থিরতা, ধীরতা, গাম্ভীর্য, ধর্মভয়, বিনয়, জ্ঞান বলতে কিছু নাই। ওরা সত্যিই পাগল যুবককে বাষ্পীয় ইঞ্জিন-আবদ্ধ শক্তি বলা যায়। বুদ্ধিমান যিনি তিনি যৌবনশক্তিকে সুপথে চালিত করেন এবং তার সাহায্যে জগতে আশ্চর্য আশ্চর্য কাজ করেন। জাতির যৌবনকে ব্যবহার করতে শেখ-তুমি জাতির পরম কল্যাণ করতে পারবে। যুবকের প্রাণ বড় সুন্দর, বড় মধুর-যে ওকে ব্যবহার করতে শিখেছে, সেই জগতের রাজা হতে পেরেছে।
যৌবনের পরম দানকে কামুকতায়, শুক্রক্ষয়ে, পাপের পথে নষ্ট করে ফেল না। স্থবির হয়ে জীবনের পরম সৌভাগ্য হতে বঞ্চিত হয়ো না। যৌবনের বলহারা যে হল; সে রাজ্য হারা হল। যৌবন শক্তির সদ্ব্যবহার করো। মহাকালে, ঐশ্বরিক কার্যে তোমার যৌবনকে ব্যবহার করো। তোমার জীবনে বসন্ত জেগেছে, এ বসন্ত কি বৃথা হয়ে যাবে তোমার কাছে? বসন্তকে পূজা করে ঘরে তুলে নাও! যৌবন ছাড়া জীবনে দুঃখ হাসিমুখে আর কে অত সইতে পারে? প্রচণ্ড টাইবার নদীর বুকে অসীম সাহসে কে লাফিয়ে পড়তে পেরেছিল-সে যৌবন।
যৌবনশক্তির অপব্যবহার দেখলে আমাদের দুঃখের অন্ত থাকে না। যে যৌবন পৃথিবীতে শান্তি ও কল্যাণের মন্ত্র প্রচার করবে।
কম দেখান