আ ন ম সিরাজুর রহমান (১৯৩৪ - ১ জুন ২০১৫) ছিলেন একজন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী ব্রিটিশ সাংবাদিক ও সম্প্রচারকারী। ১৯৬০ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তিনি বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে কাজ করেন এবং বিবিসি বাংলার উপ-প্রধান পদ থেকে অবসরে যান। অবসর পরবর্তী সময়ে তিনি বিভিন্ন সংবাদপত্রে কলাম লিখতেন। সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।
প্রারম্ভিক জীবন
রহমান ১৯৩৪ সালে তৎকালীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) নোয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা হাবিবুর রহমান ছিলেন কলকাতার...
আরো পড়ুন
আ ন ম সিরাজুর রহমান (১৯৩৪ - ১ জুন ২০১৫) ছিলেন একজন বাংলাদেশে জন্মগ্রহণকারী ব্রিটিশ সাংবাদিক ও সম্প্রচারকারী। ১৯৬০ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তিনি বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে কাজ করেন এবং বিবিসি বাংলার উপ-প্রধান পদ থেকে অবসরে যান। অবসর পরবর্তী সময়ে তিনি বিভিন্ন সংবাদপত্রে কলাম লিখতেন। সাংবাদিকতায় অনন্য অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।
প্রারম্ভিক জীবন
রহমান ১৯৩৪ সালে তৎকালীন বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) নোয়াখালী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মাওলানা হাবিবুর রহমান ছিলেন কলকাতার আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক এবং পণ্ডিত। সিরাজুর তার শৈশবে বেশিরভাগ সময় কাটান কলকাতায়। তিনি ১৯৪৭ সালে কলকাতা মিত্র ইনস্টিটিউশন স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পাস করেন। তিনি মুকুলের মাহফিল ইয়ুথ অর্গানাইজেশনের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। কলকাতার "দৈনিক আজাদ", "নবযুগ", ও "সাপ্তাহিক মিল্লাত"-এর কিশোর পাতায় তার রচিত নিবন্ধ এবং ছোট গল্প প্রকাশিত হত। এছাড়া তিনি অল ইন্ডিয়া রেডিওর অনুষ্ঠানসমূহে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন।[১][২]
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর রহমান ঢাকা চলে আসেন এবং ঢাকা কলেজে ভর্তি হন। তিনি ১৯৪৮ সাল থেকে শুরু হওয়া বাংলা ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। তিনি ঢাকা কলেজ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাথে সমন্বয়কারী হিসেবে নির্বাচিত হন।
কর্মজীবন
রহমান সাংবাদিক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি "অর্ধসাপ্তাহিক পাকিস্তান", "দৈনিক জিন্দেগী", "দৈনিক ইনসাফ" এবং "দৈনিক মিল্লাত"-এর সংবাদ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ১৯৫৩ সালের জানুয়ারি মাসে তিনি ঢাকাস্ত ব্রিটিশ ইনফরমেশন সার্ভিসে সম্পাদক পদে নিযুক্ত হন। তার নেতৃত্বে ১২ জন সাংবাদিকসহ প্রেসের আকার বর্ধিত হয়। এই সময়ে তিনি দ্বিভাষী সংবাদ বুলেটিন "পাক্ষিক ব্রিটিশ দর্পণ" এবং ম্যাগাজিন "আজকের কমনওয়েলথ" এর সম্পাদক ছিলেন। ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের খণ্ডকালীন উপসম্পাদক হিসেবেও যুক্ত ছিলেন।
১৯৬০ সালের জানুয়ারি মাসে রহমান বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের পূর্ব পাকিস্তান বিভাগে যোগ দেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ বিষয়ক সংবাদসমূহের আন্তর্জাতিক পরিবেশনার সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি বিবিসিতে দীর্ঘ ৩৪ বছরের কর্মজীবন শেষে বিবিসি বাংলার উপ-প্রধান পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন।[৩] অবসরের পরে তিনি বিভিন্ন ইংরেজি ও বাংলা সংবাদপত্রে কলাম লিখতেন। ২০০৭ সালের মাঝামাঝি থেকে তিনি "দৈনিক নয়া দিগন্ত"-এ কলাম লিখতেন। কলাম লেখা ছাড়াও তিনি কিছু প্রবন্ধ ও অনুবাদ গ্রন্থ রচনা করেছেন।
কম দেখান