অধ্যাপক ড. শাহ জে মিয়া গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি কৃতিত্বের সাথে ফুলছড়ি প্রাইমারি স্কুল থেকে প্রাথমিক, ফুলছড়ি পাইলট হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও গাইবান্ধা সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক লেখাপড়া শেষ করেন। ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত দুরন্ত ও অনুসন্ধানী মানসিকতার এই মানুষটি ১৯৯১-৯২ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত পদার্থবিদ্যা এবং ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অনার্স এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রিসহ উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন। তার মেধার স্বাক্ষর হিসেবে কম্পিউটার ভাইরাসের উপর গবেষণালব্ধ প্রবন্ধ তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশের জাতীয় পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত হয়। কিছুদিন কর্পোরেট এবং আদমজী...
আরো পড়ুন
অধ্যাপক ড. শাহ জে মিয়া গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি কৃতিত্বের সাথে ফুলছড়ি প্রাইমারি স্কুল থেকে প্রাথমিক, ফুলছড়ি পাইলট হাই স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও গাইবান্ধা সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক লেখাপড়া শেষ করেন। ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত দুরন্ত ও অনুসন্ধানী মানসিকতার এই মানুষটি ১৯৯১-৯২ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত পদার্থবিদ্যা এবং ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে অনার্স এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রিসহ উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করেন। তার মেধার স্বাক্ষর হিসেবে কম্পিউটার ভাইরাসের উপর গবেষণালব্ধ প্রবন্ধ তৎকালীন সময়ে বাংলাদেশের জাতীয় পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত হয়। কিছুদিন কর্পোরেট এবং আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের কম্পিউটার সায়েন্সের প্রভাষক হিসেবে কাজ করার পর ২০০০ সালে উচ্চতর শিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়া পাড়ি জমান। প্রথমেই অস্ট্রেলিয়ার সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটিতে এবং পরে গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটিতে তথ্য প্রযুক্তিতে এবং পরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে (আইসিটি) স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। এরপরে গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটিতে পার্ট-টাইম একাডেমিক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ান সরকারের রিসার্চ কাউন্সিল কর্তৃক প্রদানকৃত পিএইচডি স্কলারশিপ অর্জন করেন। এই সরকারি স্কলারশিপের অংশ হিসেবে তিনি কুইন্সল্যান্ড ডিপার্টমেন্ট অব দ্য প্রাইমারি ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড ফিশারিজ এ গবেষণা করেন। এর অংশ হিসেবে ২০০৮ সালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে (আইসিটি) ডক্টরেট ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি তথ্য প্রযুক্তি ও সিস্টেমের উপরে একজন অত্যন্ত সফল শীর্ষস্থানীয় একাডেমিক এবং গবেষক হিসেবে অস্ট্রেলিয়ান সানশাইন কোস্ট ইউনিভার্সিটি, জেমস কুক ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি এবং বর্তমানে নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটিতে সিনিয়র প্রফেসর হিসেবে কর্মরত। তার গবেষণালব্ধ ধারণা এবং প্রভাব অস্ট্রেলিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সমাদৃত হয়েছে।
তিনি ২০০৮ সালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিতে (আইসিটি) ডক্টরেট ডিগ্রি সম্পন্ন করেন এবং বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ার নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।
অধ্যাপক শাহ-এর গবেষণা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্স এবং পঞ্চম শিল্প-বিপ্লবের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। বিগত ২০ বছরে, অধ্যাপক শাহ এই ক্ষেত্রগুলোতে উল্লেখযোগ্য জ্ঞান বিকাশ করেছেন যা তার ২৫০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য গবেষণা-প্রকাশনায় প্রকাশিত হয়েছে। এর সাথে তিনি ২টি গবেষণা বইসম্পাদনাসহ একাধিক আন্তর্জাতিক একাডেমিক কনফারেন্সে সভাপতিত্ব করেছেন।
দীর্ঘ একাডেমিক যাত্রায় তিনি ইউনিভার্সিটি অব নিউক্যাসল, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব দ্য সানশাইন কোস্ট, গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটি এবং জেমস কুক ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা এবং গবেষণা কাজ সম্পাদন করা সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ একাডেমিক পদে দায়িত্বরত ছিলেন।
অধ্যাপক শাহ বাংলাদেশের স্বাস্থসেবা, পরিবহণসেবা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ডিজিটাল সরকার ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক সেবা-সম্পর্কিত একাধিক গবেষণা কাজ করেছেন যা পৃথিবীর বুকে বহুল সমাদৃত এবং তার এই কাজগুলো বেশকিছু পৃথিবীর সেরা জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। তার এই গবেষণালব্ধ জ্ঞান এবং ধারণা বাংলাদেশের আগামী প্রজন্মের অগ্রগতিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। এছাড়া দীর্ঘকাল ধরে তিনি বর্তমান বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জ্ঞান-বিজ্ঞানের অগ্রগতির জন্য দৈনিক দিনকাল, যুগান্তর এবং আমার দেশ-এর মতো বেশকিছু জাতীয় পত্রিকায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত প্রবন্ধ প্রকাশ করে আসছেন।
অধ্যাপক শাহ অস্ট্রেলিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য কার্যকর আইসিটি শিক্ষাদান, শিক্ষা প্রোগ্রাম এবং অবকাঠামো তৈরি করে চলছেন। উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিল্পের ঊর্ধ্বগতি এনে শিক্ষাদান ও গবেষণার চর্চা বৃদ্ধি করে উচ্চ শিক্ষার খাতকে অর্থনৈতিক চালিকা শক্তিতে রূপান্তরিত করার জন্য তার দক্ষতা স্বীকৃত হয়েছে। তিনি অস্ট্রেলিয়ান সরকারের সাথে উচ্চতর শিক্ষার উন্নতির জন্য বহু গবেষণানির্ভর কাজ করেছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু কাজ হলো, কীভাবে গবেষণায় উচ্চ মানের শিক্ষাদান প্রদান করা যায়, যার ফলে গবেষণালব্ধ ফলাফলের সর্বোচ্চ বাস্তবায়ন সম্ভব, উচ্চ শিক্ষায় প্রাক্তন ছাত্র এবং শিল্পের অংশীদারিত্ব এনে এর মাধ্যমে দেশের অর্থনীতির অগ্রগতি নিশ্চিত করা। এছাড়া অধ্যাপক শাহ কার্যকরভাবে নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব এবং সহযোগিতামূলক একাডেমিক সংস্কৃতি বিকাশের ক্ষেত্রে তার অভাবনীয় দক্ষতা প্রকাশ করেছেন।
অধ্যাপক শাহ বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত গবেষকদের সাথে একাধিক তথ্যপ্রযুক্তি ও সিস্টেম-সম্পর্কিত গবেষণাকাজে অংশগ্রহণ করেছেন এবং প্রতিটি কাজে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে চলেছেন। তাঁর কাজের মধ্যে রয়েছে Consumer Behaviour-সম্পর্কিত উচ্চমানের গবেষণা, এছাড়া রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সামাজিকীকরণ ব্যবহার, সোশ্যাল রোবোটিক্স (Social Robotics), স্মার্ট সিটি ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ডিজাইন (Smart City Management and Design), স্মার্ট সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট (Smart Supply Chain Management), ইন্টারনেট অব থিংস (Internet of Things-IoT), ডাটা-ড্রিভেন পর্যটন গন্তব্য বিশ্লেষণ (Data-driven Tourism Destination Analysis) এবং স্বাস্থ্যসেবায় ব্লকচেইনের ভূমিকা (Blockchain in Healthcare) |
সর্বোপরি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ডেটা অ্যানালিটিক্স জ্ঞানের উন্নতির জন্য অধ্যাপক শাহ মিয়ার অবদান উচ্চ শিক্ষা এবং প্রাসঙ্গিক একাডেমিক অনুশীলনে একটি নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে যা কিনা বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য একটি বিশাল সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে। একজন সফল একাডেমিক হিসেবে তাঁর মহান অবদান বিশ্বব্যাপী সমাদৃত, যার প্রভাব বিশ্বব্যাপী উচ্চতর শিক্ষা এবং শিল্পক্ষেত্রে একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে, যা কিনা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
কম দেখান