অনুপম সেনের জন্ম ১৯৪০ সালের ৫ই আগস্ট চট্টগ্রাম শহরে। তাঁর মাতা স্নেহলতা সেন ও পিতা বীরেন্দ্রলাল সেন। বীরেন্দ্রলাল সেন প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে এম.এ. এবং রিপন কলেজ থেকে বি.এল. ডিগ্রি অর্জন করে ১৯২০ সালে চট্টগ্রাম কোর্টে ওকালতি শুরু করেন। প্রমাতামহ ছিলেন বিশ্ববিশ্র“ত পণ্ডিত তিব্বত-পরিব্রাজক শরৎচন্দ্র দাশ। শরৎচন্দ্র কর্তৃক তিব্বত থেকে উদ্ধারকৃত ও অনূদিত মহাকবি ক্ষেমেন্দ্রের বোধিসত্ত্ব অবদান-এর গল্প অবলম্বন করেই রবীন্দ্রনাথ রচনা করেন ‘শ্যামা’ ‘পূজারিনী’ প্রভৃতি অসাধারণ নৃত্যনাট্য ও কবিতা। স্বাভাবিক যে, অনুপম সেন শৈশব থেকেই সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে গড়ে ওঠার...
আরো পড়ুন
অনুপম সেনের জন্ম ১৯৪০ সালের ৫ই আগস্ট চট্টগ্রাম শহরে। তাঁর মাতা স্নেহলতা সেন ও পিতা বীরেন্দ্রলাল সেন। বীরেন্দ্রলাল সেন প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইংরেজিতে এম.এ. এবং রিপন কলেজ থেকে বি.এল. ডিগ্রি অর্জন করে ১৯২০ সালে চট্টগ্রাম কোর্টে ওকালতি শুরু করেন। প্রমাতামহ ছিলেন বিশ্ববিশ্র“ত পণ্ডিত তিব্বত-পরিব্রাজক শরৎচন্দ্র দাশ। শরৎচন্দ্র কর্তৃক তিব্বত থেকে উদ্ধারকৃত ও অনূদিত মহাকবি ক্ষেমেন্দ্রের বোধিসত্ত্ব অবদান-এর গল্প অবলম্বন করেই রবীন্দ্রনাথ রচনা করেন ‘শ্যামা’ ‘পূজারিনী’ প্রভৃতি অসাধারণ নৃত্যনাট্য ও কবিতা। স্বাভাবিক যে, অনুপম সেন শৈশব থেকেই সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে গড়ে ওঠার সুযোগ পান।
অনুপম সেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬২ সালে বি.এ (অনার্স) এবং ১৯৬৩ সালে এম.এ ডিগ্রি অর্জন করেন সমাজতত্ত্বে। পরে কানাডার ম্যাকমাষ্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৪ সালে এম.এ ও ১৯৭৯ সালে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৫ সালের মার্চ মাসে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (তখন E.P.U.E.T) প্রভাষক হিসেবে শিক্ষকতায় যোগ দিয়ে পরে ১৯৬৬ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘ চার দশক ধরে শিক্ষকতা পেশায় ব্রতী ছিলেন। বর্তমানে তিনি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য।
সমাজতত্ত্ব এবং সাহিত্য-শিল্পকলার বিভিন্ন বিষয়ে বহু গ্রন্থের তিনি লেখক। বিশ্ববিখ্যাত প্রকাশক জড়ঁঃষবফমব তাঁর Routledge Zuvi The State, Industrialization and Class Formations in India গ্রন্থটি প্রকাশ করেছেন। তাঁর বাংলাদেশ : সমাজ ও রাষ্ট্র, বাংলাদেশ ও বাঙালি : রেনেসাঁস, স্বাধীনতা-চিন্তা ও আত্মানুসন্ধান, ব্যক্তি ও রাষ্ট্র : সমাজ-বিন্যাস ও সমাজ-দর্শনের আলোকে; ‘আদি-অন্ত বাঙালি : বাঙালি সত্তার ভূত-ভবিষ্যৎ; বাংলাদেশ : ভাবাদর্শগত ভিত্তি ও মুক্তির স্বপ্ন; কবি-সমালোচক শশাঙ্কমোহন সেন; বাঙালি-মনন, বাঙালি-সংস্কৃতি : সাতটি বক্তৃতা; সুন্দরের বিচার সভাতে; বিলসিত শব্দগুচ্ছ; বিচিত ভাবনা; জীবনের পথে প্রান্তরে; ইতিহাসের অবিনশ্বর প্রভৃতি গ্রন্থ বিদগ্ধ পাঠকসমাজে আদৃত হয়েছে।
১৯৭১ সালে যখন তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তখন সক্রিয়ভাবে মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। অতঃপর তিনি নিরবচ্ছিন্নভাবে মানুষের অধিকার আদায়ের বিভিন্ন সংগ্রামে যুক্ত আছেন। ১৯৮৩-৮৪ সালে ‘বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনে’র সভাপতি হিসেবে তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রামী শিক্ষক-সমাজ সামরিক আইন উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে এসেছিল এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য।
১৯৬০ সাল থেকে তিনি বাংলাদেশ ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত ও যুক্ত রয়েছেন।
কম দেখান