গ্রামীণ মানুষের জীবনযাত্রা ও চিন্তা-চেতনা নাগরিক শিক্ষিত জনগোষ্ঠী থেকে স্বতন্ত্র। লোকসমাজের পরম্পরাগত জ্ঞান তথা লোকপ্রজ্ঞা থেকে উদ্ভূত সংস্কৃতি নিঃসন্দেহে অপেক্ষাকৃত জীবন্ত। বাংলার সাধারণ মানুষের প্রজ্ঞা ও চিত্ত-নির্যাসে সৃষ্ট চেতনাবোধই বাঙালির প্রকৃত পরিচয়স্থল। লোকায়ত সাহিত্যে সাধারণ মানুষের অন্তর নিসৃত বাণী ও ভাবনার সমন্বয়ে সর্বাঙ্গীণ জীবনচর্যা উদ্ভাসিত হয়। মহাকালের বহুমাত্রিক ঘাত-প্রতিঘাতের নানা...
আরো পড়ুন
গ্রামীণ মানুষের জীবনযাত্রা ও চিন্তা-চেতনা নাগরিক শিক্ষিত জনগোষ্ঠী থেকে স্বতন্ত্র। লোকসমাজের পরম্পরাগত জ্ঞান তথা লোকপ্রজ্ঞা থেকে উদ্ভূত সংস্কৃতি নিঃসন্দেহে অপেক্ষাকৃত জীবন্ত। বাংলার সাধারণ মানুষের প্রজ্ঞা ও চিত্ত-নির্যাসে সৃষ্ট চেতনাবোধই বাঙালির প্রকৃত পরিচয়স্থল। লোকায়ত সাহিত্যে সাধারণ মানুষের অন্তর নিসৃত বাণী ও ভাবনার সমন্বয়ে সর্বাঙ্গীণ জীবনচর্যা উদ্ভাসিত হয়। মহাকালের বহুমাত্রিক ঘাত-প্রতিঘাতের নানা বিভঙ্গে সৃজিত হয় লোকপ্রজ্ঞার সংহত বুনিয়াদ। বাংলার উত্তর জনপদে সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা রাজবংশীতে রচিত সাহিত্যধারা যথেষ্ট সমৃদ্ধ। লোকজ সাহিত্যে এই অঞ্চলের সামগ্রিক জীবন-ভাবনা বাণীময়তা পেয়েছে। বিষয়-বৈভবের দিক থেকে উত্তরবঙ্গের লোকসাহিত্য অত্যন্ত বৈচিত্র্যপূর্ণ। আঞ্চলিক লোকসঙ্গীত, প্রবাদ- প্রবচন, ধাঁধা, কিংবদন্তি প্রভৃতি আঙ্গিকে ছড়িয়ে আছে এই অঞ্চলের সহজ-সরল মানুষের অন্তরাত্মার বিমিশ্র অনুভব। জীবন সংলগ্ন হওয়ায় শিল্পমাত্রই সামাজিক। লোকসাহিত্যের উৎস ও বিকাশ ধারা লোকসমাজের প্রাণশক্তির সঙ্গে অন্তরঙ্গভাবে জড়িত। কালান্তরে বিবর্ধিত সামূহিক চেতনাকে ধারণ করে বাংলার ধাঁধা ও প্রবাদ সাধারণ মানুষের অন্তর্লোকের বিশ্বস্ত দলিল সমাজ ও যুগ-পরিবেশের মৃত্তিকা আশ্রয় করে লোকসাহিত্যের রূপ-রূপান্তরের মাধ্যমে সভ্যতা ও সংস্কৃতি এগিয়ে চলছে। তাই লোকপ্রজ্ঞার সামগ্রিক মূল্যায়নই হতে পারে বাংলার সাংস্কৃতিক পরিচয়ের মূলসূত্র। প্রচ্ছদ: মোস্তাফিজ কারিগ
কম দেখান