'পথের পাঁচালী' বিভূতিভূষণের প্রথম উপন্যাস। ১৩৩৬ বঙ্গাব্দে এর প্রথম প্রকাশকাল থেকে এ পর্যন্ত বাঙালি পাঠকের প্রায় চারটি প্রজন্ম এই অনন্যসাধারণ গ্রন্থটির কাছে আত্মসমর্পণ করে আছে। কীসের জোরে এমনটা সম্ভব হল? 'পথের পাঁচালী' পড়ে রবীন্দ্রনাথ বিভূতিভূষণকে লিখেছিলেন, 'বইখানা দাঁড়িয়ে আছে আপন সত্যের জোরে।... এর থেকে শিক্ষা হয়নি কিছুই, দেখা হয়েছে অনেক...
আরো পড়ুন
'পথের পাঁচালী' বিভূতিভূষণের প্রথম উপন্যাস। ১৩৩৬ বঙ্গাব্দে এর প্রথম প্রকাশকাল থেকে এ পর্যন্ত বাঙালি পাঠকের প্রায় চারটি প্রজন্ম এই অনন্যসাধারণ গ্রন্থটির কাছে আত্মসমর্পণ করে আছে। কীসের জোরে এমনটা সম্ভব হল? 'পথের পাঁচালী' পড়ে রবীন্দ্রনাথ বিভূতিভূষণকে লিখেছিলেন, 'বইখানা দাঁড়িয়ে আছে আপন সত্যের জোরে।... এর থেকে শিক্ষা হয়নি কিছুই, দেখা হয়েছে অনেক যা পূর্বে এমন করে দেখিনি। এই গল্পে গাছপালা পথঘাট মেয়েপুরুষ সুখদুঃখ সমস্তকে আমাদের আধুনিক অভিজ্ঞতার প্রাত্যহিক পরিবেষ্টনের থেকে দূরে প্রক্ষিপ্ত করে দেখানো হয়েছে। সাহিত্যে একটা নতুন জিনিস পাওয়া গেল অথচ পুরাতন পরিচিত জিনিসের মতো সে সুস্পষ্ট। 'পথের পাঁচালী'র এই সরল সত্যের জোর, এর মৌলিকতা ও সরস নবীনতা বাংলা-উপন্যাসের গতানুগতিশীলতার মধ্যে এমনই একটি পরম বিস্ময়াবহ আবির্ভাব যে, প্রথম প্রকাশের একাশি বছর পরেও ইন্দির ঠাকরুন, হরিহর, সর্বজয়া, দুর্গা ও অপু-কে বাঙালি-পাঠক পরমাত্মীয়ের মতো সঙ্গী করে নিয়েছে নিজেদের জীবনপথের। কেননা, এই উপন্যাস পড়তে পড়তে সে উপলব্ধি করে, '... মানুষ ছোট নয়, জীবন তুচ্ছ নয়, কালের পারাবারে যে অগণিত মন্বন্তর-তরঙ্গ আছাড়িয়া পড়িতেছে, তাহার মুখে সেই অনন্তবিস্তার ভূমিসৈকতে আমার সুখ-দুঃখের শঙ্খ-শুক্তির যেমন হিসাব নাই, তেমনি তাহাদের সে বর্ণ-গরিমাও ব্যর্থ নয়।'
কম দেখান