মরক্কোর অধিবাসী ইবনে বতুতা পৃথিবী ভ্রমণের জন্যই মূলত বিখ্যাত হয়ে আছেন। একুশ বছর বয়স থেকে শুরু করে জীবনের পরবর্তী ৩০ বছরে তিনি প্রায় ৭৫,০০০ মাইল পথ পরিভ্রমণ করেছেন। তিনিই একমাত্র পরিব্রাজক যিনি তার সময়কার সমগ্র মুসলিম বিশ্ব ভ্রমণ করেছেন এবং তৎকালীন সুলতানদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। বর্তমান পশ্চিম আফ্রিকা থেকে শুরু...
আরো পড়ুন
মরক্কোর অধিবাসী ইবনে বতুতা পৃথিবী ভ্রমণের জন্যই মূলত বিখ্যাত হয়ে আছেন। একুশ বছর বয়স থেকে শুরু করে জীবনের পরবর্তী ৩০ বছরে তিনি প্রায় ৭৫,০০০ মাইল পথ পরিভ্রমণ করেছেন। তিনিই একমাত্র পরিব্রাজক যিনি তার সময়কার সমগ্র মুসলিম বিশ্ব ভ্রমণ করেছেন এবং তৎকালীন সুলতানদের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। বর্তমান পশ্চিম আফ্রিকা থেকে শুরু করে মিশর, সৌদি আরব, সিরিয়া, ইরান, ইরাক, কাজাকিস্তান, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং চীন ভ্রমণ করেছিলেন তিনি। ভ্রমণকালে তিনি এই উপমহাদেশের বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব, সুফি, সুলতান, কাজি এবং আলেমদের সাক্ষাৎ লাভ করেন। তাদের মধ্যে সিলেটের শাহ জালাল (র:) ছিলেন অন্যতম।
তার ভ্রমণকাহিনী সমকালীন ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক অতি মূল্যবান দলিল। দেশে দেশে ঘুরে ঘুরে যা তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন, সেগুলোকে তিনি লিখে রেখেছিলেন কাগজের বুকে। তার সেই ভ্রমণকাহিনী অবলম্বনে লিখিত উপন্যাস এই “ইবনে বতুতা ও আশুরা” ।
ইবনে বতুতার জাহাজ ঝড়ে আক্রান্ত হলে তিনি চট্টগ্রাম এসে পৌঁছান। এখানে তিনি সিলেটের পীর শাহ জালালের কথা শুনে তার সাথে মোলাকাত করার জন্য সিলেট গমন করেন। সিলেটে অবস্থান কালে তিনি দেখলেন, বাজারে দাস-দাসী কেনা-বেচা হচ্ছে। ক্রেতারা উলঙ্গ দাস-দাসীদের পেটে কাঠের হাতা দিয়ে বাড়ি দিয়ে সহ্য শক্তি পরীক্ষা করে নিচ্ছে। ইবনে বতুতা বললেন, শুনেছি সিলেটের দাসীরা অতিশয় সুন্দরী হয়। তার কথা শুনে স্থানীয় এক শাসক জব্বুল শাহ অতীব সুন্দরী একজন দাসী কিনে ইবনে বতুতাকে উপহার দিলেন। দাসীর নাম আশুরা। ইবনে বতুতার শয়নকক্ষ সাজানো। মোমের কোমল আলো তারার মতো জ্বলছে। নরম বিছানায় আশুরাকে অর্ধবসনা করে বসিয়ে রাখা হয়েছে। অতিকায় দৈত্য যেন নরম পাখির ছানাকে তার থাবার মধ্য নেবার চেষ্টা করছে। আশুরা ভয়ে ইবনে বতুতার থেকে দূরে যাবার চেষ্টা করছে। এ অবস্থায় ইবনে বতুতা ভীষণ ক্রুদ্ধ হয়ে দাসদের ডেকে বললেন, এই দাসীকে বিবস্ত্র কর। তারপর চিৎ করে চেপে ধর। হিংস্র বাঘের মতো আশুরার উপর ঝাপিয়ে পড়লেন ইবনে বতুতা অবাধ্য আশুরার উপর। পরদিন জুব্বুল শাহ বললেন, গোস্তাকি মাফ করবেন,"আশুরা মারা গেছে। তার লাশটা কী করব?" ইবনে বতুতা বললেন, এখানে দাস-দাসীদের লাশ কী করা হয়? মুয়াল্লাম বললেন, মালিক চাইলে মাটি চাপা দেওয়া হয়, অন্যথায় নগরীর ময়লাখানায় ফেলে দেওয়া হয়।
ইবনে বতুতা বললেন, ওর শরীর খুব নরম। ওকে নদীতে ভাসিয়ে দাও।"
আশুরার লাশ সুরমা নদীতে ভাসিয়ে দেয়া হলো।
কম দেখান