অপু খাইতে—খাইতে অবাক হইয়া সমস্ত ব্যাপার দেখিতেছিল। দিদি পুঁতির মালা চুরি করিয়া আনিয়াছিল কি না তাহা সে জানে না-পুঁতির মালাটা সে ইহার আগে কোনো দিন দেখে নাই; কিন্তু আমের গুটি যে চুরির জিনিস নয়, তাহা সে নিজে জানে। কাল বৈকালে দিদি তাহাকে সঙ্গে করিয়া টুনুদের বাগানে আম কুড়াইতে গিয়াছিল এবং...
আরো পড়ুন
অপু খাইতে—খাইতে অবাক হইয়া সমস্ত ব্যাপার দেখিতেছিল। দিদি পুঁতির মালা চুরি করিয়া আনিয়াছিল কি না তাহা সে জানে না-পুঁতির মালাটা সে ইহার আগে কোনো দিন দেখে নাই; কিন্তু আমের গুটি যে চুরির জিনিস নয়, তাহা সে নিজে জানে। কাল বৈকালে দিদি তাহাকে সঙ্গে করিয়া টুনুদের বাগানে আম কুড়াইতে গিয়াছিল এবং সোনামুখী তলায় যে আম কটা পড়িয়াছিল, দিদি কুড়াইয়া লইল, সে জানে। কাল হইতে অনেকবার দিদি বলিয়াছে-ও অপু, এবার সেই আমের গুটিগুলো জরাবো, কেমন তো? কিন্তু মা অসুবিধাজনকভাবে বাড়ি উপস্থিত থাকার দরুন উক্ত প্রস্তাব আর কার্যে পরিণত করা সম্ভব হয় নাই।
দিদির অত্যন্ত আশার জিনিস আমগুলা এভাবে লইয়া গেল-তাহার উপর আবার দিদি এরূপভাবে মারও খাইল। দিদির চুল ছিঁড়িয়া দেওয়ায় মায়ের উপর অত্যন্ত রাগ হইল। যখন তাহার দিদির মাথার সামনে রুক্ষ চুলের একগাছা খাড়া হইয়া বাতাসে উড়ে, তখনই কি জানি কেন, দিদির উপর অত্যন্ত মমতা হয়, কেমন যেন মনে হয়-দিদির কেহ কোথাও নাই-সে যেন একা কোথা হইতে আসিয়াছে- উহার সাথী কেহ এখানে নাই। কেবলই মনে হয়, কেমন করিয়া সে দিদির সমস্ত দুঃখ ঘুচাইয়া দিবে, সকল অভাব পূরণ করিয়া তুলিবে। তাহার দিদিকে সে এতটুকু কষ্টে পড়িতে দিবে না।
কম দেখান